হেমন্তের অলীক সার্কাস
হেমন্তের মাঠে রাতে ফুটে আছে সার্কাসের তাঁবু
সারি সারি শীর্ণ গ্রাম হাত পাতে গোবর রাঙানো
মজা পুষ্করিণী খোলে শীত জমা বাউটির খিল
নিখিল উঠেছে জেগে রিং-মাস্টারের যুদ্ধ গানে
আমি কি ভয়ের মতো? অতিকায়? বলে সিংহ
বোধবুদ্ধিহীন
ছ্যাঁকা খাওয়া মাংস তার ফুলে আছে মনোবেদনায়
সুবাসী ট্রাপিজ মেয়ে বাড়ি নোনাচন্দনপুকুর
শুকায় রাতের জামা খেজুরের বঙ্কিম খিলানে
চাঁদ-লাগা হাত তার বামন, ডোবার জলে ধুলে
রাতের খিদের গন্ধ কচুরিপানায় জ্বলে নেভে
ওখানে নক্ষত্র খসা অন্ধকারে কিশোরীর ভ্রূণ
একা জল খেলা করে, মুখ দেখে জল আয়নায়...
এখন সার্কাস হবে, জড়িয়েছে প্রাণহীন চুলে
সুবাসী তারার মালা : সিংহ আনে রক্তমাখা খড়
বামন আগুন জ্বালে, মুখ তার ভয়ে অন্তরীণ
সারি-সারি শীর্ণ হাত জাল ধরে দাঁড়িয়েছে নীচে রুদ্ধশ্বাস
রিং-মাস্টার হাঁটে, ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে, সূক্ষ বলহীনতার .
দিকে
ট্রাপিজ দড়ির থেকে পাতা খসে
অজস্র হাজার
উপোসি চুলের জালে পাতা ও শিরীষ ঘ্রাণ নামে
যুদ্ধ নেই। গান নেই। ক্ষুধা নেই। হেমস্তের অলীক সার্কাস।
[শ্রেষ্ঠ কবিতা কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত]