আমার গ্রাম
বিকেলের ঘাসমাঠে রোদ পা মুছে মিলিয়ে যায়
সূর্যাস্তের আগে আমার পৌঁছনোর কথা ছিল
নিজের গ্রামে
তখনই চিন্তার মধ্যে সেগুন মঞ্জরী ঝরে পড়ে
মনে পড়ে যায় কোন গ্রাম নেই আমার
জন্মের বেলাটি ঢেকে গেছে লতাগুল্মে
মা যেখানে কাজল লতা পুঁতে রেখে ছিল সে মাটি রুধির ক্ষরণে অন্ধ
যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সর্বংসহা আঁতুড়ঘর
সেখানে এখন শপিংমলের বেসমেন্ট
মফস্বলের মেয়েরা পোশাক বদলায় সিসি ক্যামেরার সামনে
আমার কোন গ্রাম নেই তা ভুলতে চাইলে
শহর শোনেনা, আলতো থাবা রাখে খোলা কাঁধে,
তার সব বিল্ডার জেনে গেছে আমার মুরোদ,
খুচরো পয়সা বটুয়াতে ভরে
জমি বায়না করতে এসেছিল আমার উদ্বাস্ত বাবা মা।
সে চায় আমি দূরে যাই, যেখানে ইগলুর মত ওল্টানো
প্লাস্টিকের নীচে দেহাতী মজুর থাকে পরিবার নিয়ে
উদোম মাটিতে রুটির জন্য লড়তে লড়তে
শিশুরা গ্যাংস্টার হয়ে ওঠে
সে চায় বুলডোজার আমাকে ভাঙুক বার বার
যাতে আমি তোলাবাজি বালি আর মাটি কাটা শিখে
বনে যাই পোক্ত ঠিকেদার, তার অনুগত।
গ্রামে যেতে চাই আমি।
নির্বাচনে রক্ত মেখে গ্রাম শুয়ে আছে,
তার শ্রী অঙ্গ থেকে ধোঁওয়া।
আমি নিরাময় জানি।
আমি জানি ঘৃতকুমারীর ঝোপ পুকুরের ধারে,
আমি চিনি অর্জুন বাকল ।
সরিষার পুলটিশ দেওয়ায় শিখেছি , এক গ্রাম্য কবিরাজ বন্ধু ছিল।
এই সব ভাবনাতে সন্ধে হয় আর মনে পড়ে যায়,
আমার কোন গ্রাম নেই,
এই দেশে।